কমনসেন্স, যা বাংলায় কাণ্ডজ্ঞান নামেই পরিচিত। হার্ভার্ড বিজনেস রিভিউতে ২০০০ সালে প্রকাশিত এক নিবন্ধনে কাণ্ডজ্ঞান বিষয়টিকে ব্যক্তিত্ব-সংশ্লিষ্ট সক্ষমতা হিসেবে বলা হয়েছে। অন্যের কাণ্ডজ্ঞান কিংবা কমনসেন্স নিয়ে আমরা প্রায়ই বিপত্তিতে পড়ি। মানুষভেদে কাণ্ডজ্ঞানের মাত্রা কিন্তু ভিন্ন হয়ে থাকে। কর্মক্ষেত্র, পরিবার কিংবা ব্যক্তিজীবন-সব ক্ষেত্রেই আপনি কতটা ইতিবাচক ব্যক্তিত্বের অধিকারী, তার পরিচয় কিন্তু প্রকাশ পায় কাণ্ডজ্ঞানের মাত্রা অনুসারে। জেনে নিন এমনই কিছু অলিখিত সামাজিক কমনসেন্সের কথা।
কখনোই শব্দ করে খাবেন না। আপনার হাড় চিবানোর কড়কড়ে শব্দ অন্যের জন্য বিপত্তিকর কিন্তু। মুখ বন্ধ করে ধীরস্থিরভাবে খাওয়ার অভ্যাস গড়ে তুলুন। অন্য কেউ যখন কথা বলবেন, তখন তাঁর কথার মধ্যে তাঁকে থামিয়ে দেবেন না। অন্যের কথা শেষ হলে তারপর কথা বলুন। চোখে চোখ রেখে কথা বলুন। রেস্টুরেন্টের ওয়েটার, লিফটম্যান কিংবা শপিং মলের সেলসম্যান বা গাড়ির চালক, যাঁরা আপনাকে সেবা দিচ্ছেন, তাঁদের সঙ্গে মার্জিত আচরণে কথা বলুন। চুইংগাম খাওয়া শেষে তা যেখানে-সেখানে ফেলবেন না। কাগজে বা টিস্যুতে মুড়িয়ে ডাস্টবিনে ফেলুন। সাইকেল পার্কিংয়ে কখনোই অন্যের সাইকেলের সঙ্গে নিজের সাইকেলের তালা বা লক আটকাবেন না।
শপিং মলে এসকেলেটর সিঁড়িতে পাশাপাশি দুজন দাঁড়াবেন না। এসকেলেটর সিঁড়িতে স্থিরভাবে দাঁড়িয়ে ডান পাশের চলাচলের পথ খালি রাখুন, যেন কেউ হেঁটে উঠতে চাইলে যেতে পারে। প্রকাশ্যে মুঠোফোনের লাউডস্পিকারে কথা বলা কিংবা গান শুনবেন না। কেউ আপনাকে কোনো সহযোগিতা করলে ধন্যবাদ বলুন। ধন্যবাদ ও দুঃখিত বলার চর্চা করুন। ছোট শিশুদের আদর করার ক্ষেত্রে বাবা-মা কিংবা অভিভাবকের অনুমতি চেয়ে নিন। নবজাতককে স্পর্শ করতে চাইলে হাত জীবাণুমুক্ত করে নিন। প্রত্যেক মানুষেরই একটি ব্যক্তিত্বের বলয় থাকে, তার প্রতি সম্মান দিন। অন্যের জন্য দরজা খুলে ধরে রাখা কিংবা চেয়ার টেনে দেওয়ার সৌজন্য চর্চা করুন। খাবারের টেবিলে জোর করে কাউকে খাবার প্লেটে তুলে দেবেন না।
ব্যাংকে কিংবা অন্য যেকোনো ক্ষেত্রে কখনোই কোনো ধরনের লাইন অমান্য করবেন না। আপনার আগে যিনি এসেছেন, তাঁকে সেবা নেওয়ার সুযোগ দিন। কারও বাড়িতে বেড়াতে গেলে তাঁর ব্যক্তিগত ল্যাপটপ কিংবা কম্পিউটার, মুঠোফোন ধরবেন না। এমনকি বেড়াতে গেলে অন্যের বেডরুমে উঁকি দেবেন না। অন্যের ব্যক্তিগত ডায়েরি কখনোই পড়বেন না। কাউকে বয়স, বিয়ে করেছেন কি না ও বেতন কত, এমন প্রশ্ন জিজ্ঞেস করে বিব্রত করবেন না। অন্যের বাড়িতে বেড়াতে গেলে বাথরুম ব্যবহারের প্রয়োজন হলে পরিচ্ছন্নতার বিষয়টি খেয়াল রাখুন। অফিসে আপনার কাছে অতিথি কিংবা কেউ এলে তাঁর সঙ্গে হাসাহাসি কিংবা জোরে চিৎকার করে কথা বলবেন না।