টুকিটাকি

যেভাবে বুঝবেন স্তন ক্যান্সার

By Green Desk

April 26, 2018

স্তন ক্যান্সার নারীদের কাছে একটি আতংকের নাম। পুরুষের চেয়ে নারীদের স্তন ক্যান্সারে আক্রান্ত হওয়ার ঝুঁকি থাকে শতভাগ বেশি। আর নারীরা তাদের নিজেদের এই গোপন অঙ্গের রোগগুলো সহজে কারও কাছে বলতে চান না। ফলে তারা স্তন ক্যান্সারের মতো জটিল রোগে আক্রান্ত হচ্ছেন প্রতিনিয়ত।

স্তন ক্যান্সার সম্পর্কে বিভিন্ন অভিজ্ঞতার কথা যুগান্তরকে জানিয়েছেন জাতীয় ক্যান্সার গবেষণা ইনস্টিটিউটের সহযোগী অধ্যাপক ও বিভাগীয় প্রধান ডা. মো. হাবিবুল্লাহ তালুকদার রাসকিন (ক্যান্সার ইপিডেমিওলজি বিভাগ)।

ডা. মো. হাবিবুল্লাহ তালুকদার রাসকিন বলেন, বেশিরভাগ নারী নিজেদের স্বাস্থ্য সম্পর্কে সচেতন না। স্তন ক্যান্সারে আক্রান্ত হওয়ার বিভিন্ন কারণ রয়েছে। তবে যেসব মায়েরা সন্তানদের বুকের দুধ খাওয়ান না, তাদের স্তন ক্যান্সারে ঝুঁকি বেশি।

স্তন ক্যান্সারের কারণ সম্পর্কে তিনি বলেন, স্তন ক্যান্সারের বিভিন্ন লক্ষণ রয়েছে। স্তন কিংবা বগলে চাকা বা দলা অনুভব করা, স্তনের কোথাও লালচে ভাব কিংবা ব্যথা অনুভব, গুটি অনুভব করাসহ বিভিন্ন উপসর্গ দেখা দেয়।

হাবিবুল্লাহ তালুকদার রাসকিন যুগান্তরকে বলেন, নারীরা স্তন ক্যান্সারে আক্রান্ত হন সবচেয়ে বেশি। এজন্য এক্ষেত্রে নারীদের সচেতন হতে হবে। কারণ একজন সুস্থ মা একজন সুস্থ সন্তান জন্ম দিতে পারেন। কিন্তু আমাদের দেশের বেশিরভাগ নারীরা তাদের স্বাস্থ্য সম্পর্কে সচেতন না। এছাড়া তারা ডাক্তারের কাছে যেতে চান না।

তিনি বলেন, বাংলাদেশে প্রতি বছর ১৫ হাজার নারী স্তন ক্যান্সারে আক্রান্ত হয়ে থাকেন। আর মারা যান আট হাজারের মতো। আমাদের দেশে ৪০ বছরের পর নারীদের স্তন ক্যান্সারের ঝুঁকি বাড়তে থাকে।

বগলে চাকা বা দলা অনুভব করা স্তনের যে কোনো স্থানে চাকা, দলা, গোটা হওয়া, টিউমার, প্রদাহ হলে। জেনে রাখবেন বেশিরভাগ চাকা, দলা বা গোটা বেনাইন বা ক্যান্সার নয়। স্তন কিংবা বগলে চাকা বা দলা অনুভব করলে এটি স্তন ক্যান্সারের লক্ষণ হতে পারে। অনেক সময় ঋতুচক্রের সময় অনেক মহিলার ক্ষেত্রে এ ধরনের লক্ষণ দেখা দেয় এবং ঋতুচক্র পরবর্তী সময়ে তা চলেও যায়। তবে এ লক্ষণ স্থায়ী হলে তা পরীক্ষা করে দেখা প্রয়োজন।

স্তনে ব্যথা স্তন ক্যান্সারের লক্ষণ হিসেবে স্তনে ক্যান্সারে যে চাকা বা দলার মতো অনুভূত হয়। এছাড়া খোঁচা লাগে এমন অনুভূতি হতে পারে।

স্তনের চামড়া, বোটা, রং পরিবর্তন স্তন ক্যান্সারের অন্যতম লক্ষণ হলো স্তনের চামড়া ও বোঁটার চারপাশের চামড়া কুঁচকে যাওয়া, রংয়ের পরিবর্তন, দানা দানা হওয়া।

স্তনের বোঁটা ভেতরের দিকে ঢুকে যাওয়া স্তন ক্যান্সার হলে স্তনের বোটা কুঁচকে ভেতরের দিকে ঢুকে যায়। এটি স্তন ক্যান্সারের লক্ষণ। তাই এ ধরনের লক্ষণ দেখা দিলে অবশ্যই ডাক্তারের পরামর্শ নিতে হবে।

বোঁটা থেকে রক্ত, রস, পুঁজ বের হওয়া স্তনের বোঁটা দিয়ে যদি কোনো রক্ত, রস, পুঁজ বের হয়। এছাড়া বগলের নিচে কোনো ফোলা, দলা, চাকা। এ ধরনের লক্ষণ দেখা দিলে চিকিৎসকের পরামর্শ নিতে হবে, কোনোভাবেই আবহেলা করা যাবে না।

ছড়িয়ে পড়া স্তন ক্যান্সার ছড়িয়ে পড়া স্তন ক্যান্সারের জন্য (সাধারণত ফুসফুস, লিভার, হাড়, মস্তিষ্কে) আক্রান্ত অর্গানের ওপর লক্ষণ নির্ভর করে। যেমন ফুসফুসে আক্রান্ত হলে শ্বাসকষ্ট, বুক ব্যথা, কফ, রক্তমিশ্রিত কফ, হাড়ে আক্রান্ত হলে হাড় ব্যথা, হাড় ভাঙা। লিভার আক্রান্ত হলে জন্ডিস, লিভার ফেইলর, মস্তিষ্ক আক্রান্ত হলে হঠাৎ অজ্ঞান হওয়া, মূর্ছা যাওয়া, খিঁচুনি, মাথাব্যথা, চোখে ঝাপসা দেখা ইত্যাদি।

ওজন কমা, রক্তস্বল্পতা, অবসাদগ্রস্ততা, অরুচি, ক্ষুধামন্দা স্তন ক্যান্সার অন্যসব ধরনের ক্যান্সারের মতো ওজন কমা, রক্তস্বল্পতা, অবসাদগ্রস্ততা, অরুচি, ক্ষুধামন্দা জন্মায়। এক্ষেত্রে এ ধরনের লক্ষণ দেখা দিলে ডাক্তার দেখাতে হবে।

উপরের যে কোনো একটি লক্ষণ দেখা দিলে অবশ্যই চিকিৎসকের শরণাপন্ন হতে হবে। এক্ষেত্রে সময়ের ব্যত্যয় ঘটলে বিপাকে পড়তে পারেন আপনি।